ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের পাঁচ টি-টোয়েন্টির সিরিজ শেষ, তবে সিরিজের মধ্যে শুরু হওয়া বিতর্কের রেশ শেষ হচ্ছে না। চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে শিবম দুবের কনকাশন বদলি হিসেবে হর্ষিত রানাকে নামানোয় ভারতীয় দলের সমালোচনা তো হচ্ছেই, সেই সঙ্গে আঙুল উঠছে ম্যাচ রেফারির দিকে।
ভারতের ঘরের মাটিতে হওয়া সিরিজটিতে ম্যাচ রেফারি ছিলেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার জাভাগাল শ্রীনাথ। ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ও ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা পক্ষপাত ও দুর্নীতির পুরোনো দিনে ফিরে যাচ্ছে। ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার অবশ্য শ্রীনাথের বিরুদ্ধে আরও বড় অভিযোগই তুলেছেন। তাঁর মতে, সে দিন দুবের জন্য কনকাশন বদলিই দেওয়া ঠিক হয়নি।
শুক্রবার পুনের ম্যাচের কনকাশন বদলি নিয়ে বিতর্কের জেরে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক কেভিন পিটারসেন রোববার এক্সে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ওটা (দুবের জায়গায় হর্ষিত) কোনো মতেই লাইক ফর লাইক বদলি ছিল না। ম্যাচ রেফারির এ বিষয়টি মেনে নিয়ে বলা উচিত যে তাঁর ভুল হয়েছে।
চিকিৎসক কর্তৃক একজন খেলোয়াড়ের কনকাশন (মাথায় আঘাতজনিত সমস্যা) নিশ্চিত করার পর খেলোয়াড় বদলের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে থাকেন ম্যাচ রেফারি। এ ক্ষেত্রে শ্রীনাথ ভারতীয় দলের প্রতি পক্ষপাত করেছেন বলে মনে করছেন আইসিসি এলিট প্যানেলের ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড। পিটারসেনের পোস্টে গিয়ে এই সাবেক ক্রিকেটার লেখেন, এ ধরনের পরিস্থিতি বন্ধ করার জন্য নিরপেক্ষ ম্যাচ অফিশিয়ালসকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। আইসিসি কেন পক্ষপাত ও দুর্নীতির সেই পুরোনো দিনগুলোতে ফিরছে?
একই বিষয়ে অন্য একজনের জিজ্ঞাসার জবাবে ব্রড লেখেন, একজন ভারতীয় ম্যাচ রেফারি ভারতের এই বদলিতে অনুমোদন না দেবেন কেন? পক্ষপাত এড়ানোর জন্য নিরপেক্ষ ম্যাচ অফিশিয়ালস দেওয়া উচিত। অবশ্য ব্রড নিজেও বেশ কয়েকবার ইংল্যান্ডের ম্যাচে রেফারির ভূমিকায় কাজ করেছেন। এখন পর্যন্ত ৬২২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করা এই রেফারি গত বছর মে মাসে ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচে রেফারির দায়িত্বে ছিলেন।
এ বিষয়ে ব্রডের বক্তব্য জানতে ক্রিকবাজ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। ব্রড শুধু বলেছেন, ‘আমার কিছু বলার নেই।’
তবে কনকাশন বদলিতে রেফারি শ্রীনাথের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না বলে মনে করেন গাভাস্কারও। ভারতের কিংবদন্তি এ ক্রিকেটার টেলিগ্রাফে কলামে লিখেছেন, ‘দুবে হেলমেটে আঘাত পাওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে গেছে। এটা পরিষ্কার যে তার কনকাশন হয়নি। সুতরাং, কনকাশন বদলির অনুমতি দেওয়াই ঠিক ছিল না। হ্যাঁ, যদি ব্যাটিংয়ের সময়ই তাঁর মাসলে টান পড়ত, তাহলে বদলি দেওয়া যেতে পারত। কিন্তু সেটাও শুধু ফিল্ডিংয়ের জন্য, বোলিংয়ের জন্য নয়।’
আর কনকাশন বদলি অনুমোদন ঠিক ধরে নিলেও ‘লাইক ফর লাইক’ বা একই ধরনের খেলোয়াড় হওয়া শর্ত দুবে-হর্ষিতের ক্ষেত্রে পূরণ হয়নি বলে মত গাভাস্কারের, দুবে ও হর্ষিতের মধ্যে মিল নেই। কেউ বলতে পারেন ওদের উচ্চতা একই, ফিল্ডিংয়ের মানও একই। এর বাইরে দুজন যে ধারার খেলোয়াড়, সে দিক থেকে কোনো মিলই নেই। এটা নিয়ে ইংল্যান্ডের প্রতিক্রিয়া দেখানোর যথেষ্ট কারণ আছে। আর ভারতের এই দলটি দুর্দান্ত খেলোয়াড়ে ভরা, ম্যাচ জেতার জন্য এমন সব কাজ করে ভাবমূর্তি নষ্ট করার দরকার নেই।
খুলনা গেজেট/এএজে